বাড়ির নির্মাণে কত টুকু- রড, সিমেন্ট এবং ইটের প্রয়োজন

  বাড়ির নির্মাণে কত টুকু- রড , সিমেন্ট এবং ইটের প্রয়োজন। সবারই স্বপ্ন থাকে মনের মত একটি সুন্দর বাড়ি করার। কিন্তু বাড়ি তৈরি করতে নির্মাণকাজের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণের দরকার হয়। কিন্তু আপনি জানেন কি … বাড়ি তৈরিতে কতটুকু- রড , সিমেন্ট , ইটের প্রয়োজন। নিন্মে লেখায় দেওয়া হিসাবটি জেনে রাখুন।   বাড়ি নির্মাণে কতটুকু- রড , সিমেন্ট , ইটের প্রয়োজন। ✓ ১০ ” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি ০১ ’ ( স্কয়ার ফিট) গাথুনীতে ১০ টি ইট লাগে। ✓ ০৫ ” ওয়াল গাথুনীতে প্রতি ০১ ’ ( স্কয়ার ফিট) গাথুনীতে ০৫ টি ইট লাগে। ✓ গাথুনী এব প্লাস্টারে ০১ বস্তা সিমেন্টে ০৪ বস্তা বালি। তবে ০৫ বস্তাও দেওয়া যায়। ✓ নিচের ছলিং এ প্রতি ০১ ’ ( স্কয়ার ফিট) এর জন্য ০৩ টি ইট লাগে। পিকেট ইট দিয়ে খোয়া করতে হয়। ✓ ০৯ টি পিকেট ইট দিয়ে ০১ সিএফটি খোয়া হয়। সিএফটি অর্থা ৎ ঘনফুট। ✓ এসএফটি অর্থা ৎ দৈর্ঘ্য এবং প্রস্তের দিক দিয়ে। কলাম এবং লিংটেল এর হিসাব সিএফটি তে করতে হয়। ✓ ইঞ্চিকে প্রথমে ফুটে আনতে হবে। ( ১০ ” ÷ ১২ = ০.৮৩৩)এবং গাথুনীতে ও প্লাস্টারের হিসাব এসএফটি তে করতে হয়।   ✓ ১ ঘনমিটার ইটের গাথুনীর ও...

করোনাকালে পারিবারিক সম্পর্ক

করোনাকালে পারিবারিক সম্পর্ক

আহমেদ হেলাল


ঘরবন্দী সময়ে সম্পর্কের বাঁধন জোরালো করার সুযোগই বেশি। মডেল: রিয়াদ ও জেরিন, ফাইল ছবি: সুমন ইউসুফঘরবন্দী সময়ে সম্পর্কের বাঁধন জোরালো করার সুযোগই বেশি। মডেল: রিয়াদ ও জেরিন, ফাইল ছবি: সুমন

ইউসুফকরোনাভাইরাসের সংক্রমণকালে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। কোভিড-১৯–মুক্ত থাকতে বিশ্বজুড়ে মানুষ ঘরে থাকতে চেষ্টা করছে। বাইরের করোনাবন্দী পৃথিবী থেকে ঘরে নিরাপদে থেকে পরিবর্তন হচ্ছে সম্পর্কের অনুষঙ্গগুলো। কখনো মানসিক চাপের কারণে খিটখিটে মেজাজ আর সহনশীলতা কমে যাওয়ায় পারিবারিক দ্বন্দ্ব–সংঘাত বাড়ছে, আবার কখনো সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। আগেকার ফাটল ধরা সম্পর্কগুলো ঝালাই হচ্ছে কখনো কখনো। বলিউড তারকা ঋত্বিক রোশন আর স্ত্রী সুসানে খানের প্রায় ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক এই লকডাউনের সূত্র ধরেই কিন্তু আবার নতুন করে জোড়া লাগছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কোভিড-১৯ মহামারির শঙ্কা এবং লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে মানুষের মানসিক চাপ বাড়ছে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক বা প্যানিক, মানিয়ে চলার সমস্যা (অ্যাডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার), বিষণ্নতা, অ্যাকিউট স্ট্রেসসহ নানা রকম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকেই। কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তি, তাঁর পরিবার, চিকিৎসক–নার্সসহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত সম্মুখসারির যোদ্ধা (ফ্রন্টলাইন ফাইটার) এবং যাঁদের আগে থেকেই কোনো মানসিক রোগ ছিল, তাঁরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া যে কেউ যাঁরা এই লকডাউনকালে ঘরে আছেন, তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের ভয়, মৃত্যুভয়, জীবন–জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি।

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর কারণে মানুষের আচরণ পরিবর্তিত হচ্ছে। কখনো মেজাজ হচ্ছে খিটখিটে। সহ্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। চাহিদার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয় না ঘটায় আগ্রাসী আচরণ করছেন কেউ কেউ। ঘরে থাকতে থাকতে বিবাদে আর তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। সেখান থেকে বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা। নারীর প্রতি আক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে বলে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে।

সম্প্রতি করা কয়েকটি বিদেশি গবেষণায় কোথাও কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে ২৫ শতাংশ, আবার কোথাও ৫০ শতাংশের মতো পারিবারিক সহিংসতা বাড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো কোনো দেশে নারীদের এ বিষয়ে সহায়তার জন্য বিশেষ হেল্পলাইন চালু হয়েছে। এ ধরনের একটি বৈশ্বিক মহামারিতে পারিবারিক সহিংসতা দূর করতে কেবল মানসিক চাপ কমালেই হবে না, সেই সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও জরুরি। পাশাপাশি এই কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় আমরা যদি ইতিবাচকভাবে ভাবতে পারি, তাহলে কিন্তু দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের বদলে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে আরও দৃঢ় করা সম্ভব।

করোনাভাইরাস আমাদের থেকে কেড়ে নেবে অনেক। কিন্তু এই সময়ে ইতিবাচক সামান্য অর্জনও যদি করা যায়, তবে তা করোনা–পরবর্তী পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তুলবে। ঘরে থাকা এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের বদলে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে আরও দৃঢ় আর মধুর করে তোলা যায়। এ জন্য যা যা করা যেতে পারে—

দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে মানসিক চাপ কমাতে হবে: ঘরে থাকার সময়কে মোটেই বন্দী ভাববেন না। ভাবুন আপনি ঘরেই সবচেয়ে মুক্ত রয়েছেন। বাইরের পৃথিবীটাই বন্দী। ঘরকে বন্দিদশা মনে না করে উপভোগ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মানসিক চাপ কিছুটা কমবে। আপনার সহ্যক্ষমতা বাড়বে।

বড় বিষয়কে সামনে রাখুন: এই মুহূর্তে করোনা ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে মানবজাতির দ্বন্দ্ব হতে পারে না। তাই সবাই মিলে একসঙ্গে করোনাকে পরাজিত করতে হবে। ছোটখাটো তর্ক–বিতর্ক এড়িয়ে চলুন।

অপরের প্রতি সম্মান: পরিবারের সব সদস্যের প্রতি সম্মান দেখানোর অভ্যাস আগে যদি আপনার থেকে না–ও থাকে, তবে এবার অভ্যাসটি রপ্ত করুন। মানুষ হিসেবে আপনার পরিচয়ের অন্যতম সূচক হচ্ছে আপনি অপরকে সম্মান করছেন কি না। পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বিশেষ করে নারীদের প্রতি আপনার সম্মান জানানোর এটাই উপযুক্ত সময়। এই সুযোগ আপনার জীবনে আর কখনো না–ও আসতে পারে।

সময়টাকে কাজে লাগান:নডিউরিং লাভ বইয়ে অধ্যাপক জ্যাকুই গ্যাব তাঁর গবেষণার ফল উল্লেখ করে লিখেছেন, যে পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করতেন, করোনাকালের আগে তাঁরা জেগে থাকা অবস্থায় গড়ে দৈনিক ১৫০ মিনিটের মতো সময় একসঙ্গে কাটাতেন, যার বড় একটা অংশই ছিল দুজনে মিলে টিভি বা মুভি দেখা। কিন্তু এই করোনাকালে পরস্পরকে গুণগত সময় দেওয়ার সুযোগ এসেছে। একে অপরকে নতুন করে চিনতে শিখুন। সময়টাকে কাজে লাগান।

নিজেকে সময় দিন: নিজেকে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুটা সময় দিন। নিজেকে যত চিনতে পারবেন, তত অপরের প্রতি আপনার অনুভূতিগুলো প্রখর হবে। তাই নিজেকে সময় দিন। নিজেকে নিয়ে ভাবুন।

ঘরের কাজে অংশ নিন: পরিবারের নারী–পুরুষ, ছোট–বড় সবাই ঘরের কাজে, যাঁর যাঁর সামর্থ্যমতো অংশ নিন। এতে কাজগুলো করাকালীন চাপমুক্ত থাকবেন, একজনের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে না এবং এভাবে একটি টিম তৈরি হলে পরস্পরের সম্পর্কগুলো মজবুত হবে।

আরেকজনকে নিজস্ব সময় দিন: পরিবারে আপনার জীবনসঙ্গী যিনি আছেন, তাঁকেও তার মতো করে কিছুটা নিজস্ব সময় দিন। তিনি যেন নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারেন সে সুযোগ দিন। তিনি যাতে দিনে খানিকটা সময় নিজের করে পান, সে ব্যবস্থা রাখুন।

আপনার চিন্তা সবাই বুঝবে এটা ভাববেন না: প্রত্যেক মানুষ চিন্তায় অনন্য। তাই কখনো ধরেই নেবেন না যে আরেকজন আপনার সব চিন্তা বুঝতে পারছে। অর্থাৎ আপনার চিন্তার সঙ্গে আরেকজনের চিন্তা না–ও মিলতে পারে, তিনি আপনার যত কাছেরই হোক না কেন। প্রত্যেকের চিন্তার জগৎ আলাদা। এটা যদি মেনে নিতে পারেন, তাহলে দ্বন্দ্ব হওয়ার আশঙ্কা কম।

প্রশংসা করুন: পরিবারের মধ্যে একে অপরকে প্রশংসা করার চর্চা রাখুন। সারাক্ষণ অভিযোগ করেবেন না। ‘ঘর কেন নোংরা করলে’, ‘এটা কেন ওখানে রাখলে’ ‘এটা কেন করতে পারলে না’ এ ধরনের বাক্য ব্যবহার না করে, যেকোনো কাজ তা যতই ছোট হোক না কেন, সেটার প্রশংসা করুন।

একসঙ্গে পরিকল্পনা করুন: সবাই যেকোনো বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। ছোট-বড় সবার মতামত নিন।

সব সময় ইন্টারনেট নয়: আপনার পরিবারের যেকোনো সদস্য আপনার স্মার্টফোনের চেয়ে বেশি স্মার্ট। তাই সারাক্ষণ মুঠোফোনে, ইন্টারনেটে মুখ ডুবিয়ে থাকবেন না। পারিবারিক সময় কাটান।

রুটিন মেনে চলুন: পরিবারের সবাই মিলে সর্বসম্মত একটি রুটিন মেনে চলুন। কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন। কখন খাবেন, কখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকবেন, কখন পারিবারিক সময় কাটাবেন, সেগুলোর একটা অলিখিত নিয়ম তৈরি করুন।

হাস্যরস বজায় রাখুন: হাস্যরস এর মধ্যে থাকলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে এমন কোনো প্রমাণ আজ অব্দি পাওয়া যায়নি। তাই পারিবারিক আড্ডায় মুখ গোমড়া করে থাকবেন না। হাসুন। পারিবারিক ইভেন্টের আয়োজন করুন। ঘরোয়া খেলাধুলা নিয়ে পুরস্কার ঘোষণা করুন।

আহমেদ হেলাল : সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা।

Comments

Popular posts from this blog

বাড়ির নির্মাণে কত টুকু- রড, সিমেন্ট এবং ইটের প্রয়োজন

ভালো খাবার–মন্দ খাবার চেনেন তো?

ভারতের মুসলিমদের আশ্রয় দিক বাংলাদেশ-পাকিস্তান : তসলিমা