ক্যামেরাটা থাক ভালো
- Get link
- X
- Other Apps
ক্যামেরাটা থাক ভালো
আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২০,
করোনা পরিস্থিতির কারণে মোটামুটি অনেকেই বাসায় শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছি। বাইরে তেমন একটা বের হওয়া হচ্ছে না। শখের বা কাজের ক্যামেরাটাও সম্ভবত তুলে রাখা। বাইরে বেরিয়ে ছবি তোলা আপাতত বন্ধ অনেকেরই। যাঁরা অপেক্ষাকৃত নতুন ক্যামেরা ব্যবহারকারী বা শখের আলোকচিত্রী, তাঁরা হয়তো অনেক বিষয়ে জানি না, ক্যামেরার জন্য এই মৌসুমটা একেবারে ভালো নয়।
সোজা বাংলায় আমরা যাকে বলি ‘ভ্যাপসা’ আবহাওয়া। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অত্যধিক পরিমাণে বেশি। তার ওপর দেশের মোটামুটি সব জায়গায়ই কমবেশি বৃষ্টি লেগেই আছে। একটানা ঘরে থেকে আপনার ক্যামেরার তাই নানা সমস্যা হতে পারে এখন।
এখন কী করি
বৃষ্টির দিনে ক্যামেরা বা লেন্স অরক্ষিত রাখলে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস পড়ার আশঙ্কা থাকে প্রবল। অরক্ষিত বলতে সিন্দুকে রাখার কথা বলছি না, বেশির ভাগ সময় বদ্ধ জায়গায় রাখার জন্যই এতে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। আবদ্ধ বা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ক্যামেরা রাখা ঠিক নয়।
ছত্রাকের সমস্যায় পড়েননি এ রকম আলোকচিত্রী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ছত্রাক জালের মতো কাচের ওপর একটা স্তর তৈরি করে। এ জন্য লেন্সের ভেতর দিয়ে আলো যাওয়ার সময় বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ছবির স্বচ্ছতা (শার্পনেস) কমে যেতে শুরু করে। কমতে কমতে একটা পর্যায়ে ছবিগুলো আর ব্যবহারের উপযোগী অবস্থায় থাকে না। এ জন্য ছত্রাক থেকে বাঁচতে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
ক্যামেরার আদর্শ আর্দ্রতা
অভিজ্ঞরা সাধারণত আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৩০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে রাখার পরামর্শ দেন। যদিও এই বিষয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে, তবু মোটামুটি ৪৫ শতাংশ আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে আদর্শ ধরা যেতে পারে। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৮০ শতাংশের বেশি হলে কাচে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আবার ২০ শতাংশের নিচের আর্দ্রতাও ক্যামেরার জন্য ভালো নয়। এ ক্ষেত্রেও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যেটা মূলত ক্যামেরা বা লেন্সের মডেলের ওপরও নির্ভর করে। ক্যামেরা বা লেন্স তৈরি করার সময়ই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারণ করে দেয় যে এই যন্ত্রাংশ কী রকম আবহাওয়ায় টিকতে পারবে। নোট দেওয়া থাকে এই যন্ত্রের জন্য আদর্শ আবহাওয়া কেমন হবে সে বিষয়ে।
যা করতে হবে
ক্যামেরা বা লেন্স অবশ্যই বায়ুরোধী (এয়ারটাইট) বাক্সে সিলিকা জেলসহ রাখতে হবে। সিলিকা জেল এমন একটি উপাদান, যা বাতাসের আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে।
বর্তমানে বাজারে ক্যামেরার যন্ত্রাংশ রাখার জন্য ‘ড্রাই বক্স’ কিনতে পাওয়া যায়। সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সিলিকা জেল ব্যবহার করলে ভালো করে দেখে নিন, এর রং ঠিক আছে কি না। সিলিকা জেল সাধারণত গাঢ় নীল রঙের হয়। অকার্যকর হয়ে গেলে হালকা ফ্যাকাশে হতে শুরু করে। আসলে আর্দ্রতা শোষণ করতে করতে ক্রমশ ফ্যাকাশে হয়ে যায়। বাতাসের আর্দ্রতা সম্পর্কে সব সময় ধারণা রাখার অভ্যাস করতে হবে। আর্দ্রতা ৮০ শতাংশের বেশি হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
দূরে কোথাও ঘুরতে অথবা ছবি তুলতে গেলে সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণা নিয়ে রাখতে হবে।
মাঝে মাঝে ক্যামেরা বা লেন্স রোদে দিতে হবে। কড়া রোদে বেশিক্ষণ রাখলে অনেক সময় যন্ত্রাংশের অসম সম্প্রসারণের জন্য ছবির স্বচ্ছতা হালকা কমে যেতে পারে। এ জন্য সতর্ক হতে হবে। মাঝেমধ্যে পরীক্ষা করে দেখতে হবে কাচের অংশে ছত্রাক হয়েছে কি না। আলোর দিকে ধরলে কাচের ওপরে ছত্রাককে অনেকটা মাকড়সার জালের মতো দেখায়। আর সিলিকা জেল না পাওয়া গেলে বিকল্প হিসেবে চাল ব্যবহার করা যেতে পারে। চালেরও আর্দ্রতা শোষণের ক্ষমতা রয়েছে।
আর একান্তই ছত্রাক হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এরও সমাধান আছে। এ জন্য অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সার্ভিস সেন্টারে ছত্রাক দূর করা হয়। সেখানে নিয়ে যেতে পারেন। তবে শখের জিনিস নিয়মিত যত্নে রাখাই ভালো।
লেখক: আলোকচিত্রী
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment